স্মৃতিপাতায় অমলিন

মোঃ আব্দুল ওয়াহেদ 
নবাবগঞ্জ সরকারি কলেজ, চাঁপাইনবাবগঞ্জ 


মান্না দে'র কন্ঠে গাওয়া "কফি হাউসের সেই আড্ডা টা আজ আর নেই" গান টিকে অনুভব করে সবাই। কিন্তু বাস্তবে নিজের দিন গুলি কে যে হারিয়ে ফেলেছি সেই জ্ঞান কয় জনের ই বা মাথায় আসে,,, 

মনে পড়ে সেই শৈশবকাল? মা যখন গল্প শুনিয়ে তোমাকে খাওয়াতো। তুমি ঘুমালে তবে মায়ের ছুটি। আর আজ মা বসে থাকে খাবার টেবিলে। তুমি ঘরে ফিরলে মায়ের মুখে শোনা যেতো, খোকা এলি? আর আজ তুমি বাড়ি ফিরে দেখো মা ঘুমিয়ে গেছে।  

আজও কি মনে পড়ে স্কুল ক্যাম্পাসের সেই সোনালি দিন গুলির কথা? বিদ্যালয়ে থাকা কালীন মনে হয় এ যেনো এক জেলখানা। আর আজ সেই মায়াভরা সবুজ গালিচার স্কুল মাঠে ফিরে যেতে মন চাই বার বার। 

গ্রামের মেঠোপথ বেয়ে কলকল করে বয়ে চলা নদীর বুক পাড়ি দিয়ে আজ তুমি শহরে পৌঁছাতে পেরেছো ঠিকই ,,কিন্তু পারো নি তোমার স্মৃতি মাখা সেই অতীত কে ধরে রাখতে। তুমি পারোনি তোমার স্মৃতি মাখা দিনগুলির সাথে থাকতে। 

আচ্ছা কখনও কি শরতের নদীপাড়ের নরম কাশফুলগুলিকে ছুঁয়ে দেখতে পেরেছো? আসলে সেই সুযোগ পাবে কোথায়?, তুমি তো মহাব্যস্ত। সেই সময় পাবে কোথায়? তুমি তো অন্নচিন্তায় বিভোর।

তুমি ব্যর্থ। হ্যাঁ, তুমি ব্যর্থ কারন তুমি তোমার অতীত কে ধরে রাখতে পারো নি। তুমি আজ পারো না সবুজ শতরঁচির উপর দিয়ে হেঁটে যেতে। 

পারো না বুক ভরে নিশ্বাস নিতে। জীবসত্তাকে পালনার্থে ধরেছো শহর রাহা । কিন্তু একটি বার কি ভেবে দেখেছো তুমি আসলে কি হারালে? 

আভিজাত্যের টান তোমাকে ক্রমশ কাছে টানবে। আর তুমিও সেই দিকেই ধাবিত হবে। গভীর ভাবে চিন্তা করলে তুমিও বুঝতে পারবে আভিজাত্য কি আদৌ তোমাকে সুখ দিতে পেরেছে? পারবে না,, হ্যাঁ পারবে না কারণ প্রকৃত সুখ কখনো অর্থ কড়ি দিয়ে কেনা যায় না।  

তুমি যেই জীবনব্যবস্থাকে গ্রাম্য-অজ্ঞ বলে ডাকছো তার সাথে তোমার জীবন কে মিলিয়ে দেখো, থাকতে পারে তোমার টাকা পয়সা,বাড়ি গাড়ি,, কিন্তু হারিয়ে ফেলেছো কুঁড়েঘরের কূপির আলোয় আলোকিত অমলিন সেই দিন গুলি। 

---0---